ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী
একজন ব্যক্তির জেন্ডার, বয়স, প্রতিবন্ধিতা এবং অন্যান্য কারণগুলো তাকে দুর্যোগকালীন সময়ে অন্যদের চেয়ে ভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। বিশেষ বয়স, গোষ্ঠীর মানুষেরা দুর্যোগে অন্যদের চেয়ে অসামঞ্জস্যভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমনটা যাতে না হয় সে লক্ষ্যে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস নীতিমালা ও অনুশীলনগুলোতে অবশ্যই অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি সমন্বিত বা একীভূত করতে হবে; যেখানে ভিন্নতাকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়কে গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি সামাজিকভাবে বর্জন ও দারিদ্র্যকে চালিত করে যে বিষয়গুলো — যার মাধ্যমে সমাজের স্বতন্ত্র ব্যক্তি ও জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হয় — সেগুলো নিয়ে কাজ করার মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ককে জোরদার করার উপায়গুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

ঝুঁকির অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পেতে 'ঝুঁকি চিত্র' তৈরির প্রক্রিয়াতে অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী এবং তারা সুনির্দিষ্টভাবে কোন ধরনের ঝুঁকির মুখোমুখি হয়ে থাকেন সেগুলো অবশ্যই চিহ্নিত করতে হবে; এবং এই কাজটি করার উপযুক্ত উপায় হলো ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে ঝুঁকি চিত্র তৈরি করা।
ঝুঁকি চিত্র তৈরির সময় প্রায়শ যে বিষয়গুলো উপেক্ষিত থেকে যায় কিংবা আমরা বিবেচনা করতে ভুলে যাই তার একটি তালিকা নিচে দেয়া হলো। ঝুঁকি চিত্র তৈরির সময় এগুলো অবশ্যই বিবেচনা করুন:
- চলাচলে বাধা। অপ্রবেশগম্য রাস্তা/পথ, পরিবহন, আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা কঠোর সামাজিক নিয়মনীতির কারণে চলাচলের বাধাগুলো।
- যোগাযোগ বাধা। পরিবার, পরিচর্যাকারী, বন্ধুবান্ধব এবং সেবাদানকারী/সেবাকেন্দ্রের সাথে যোগাযোগে বাধা।
- সহায়ক উপকরণ হারিয়ে যাওয়া কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া।
- সময়মতো কিংবা প্রবেশগম্য উপায়ে আগাম সতর্কতা বার্তা দেয়া হচ্ছে না।
- অপসারণকালীন সময়ে পরিবার, পরিচর্যাকারী কিংবা ব্যক্তিগত সহায়তাকারীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া।
- সহায়তা নেটওয়ার্ক যেমন পিয়ার-সাপোর্ট গ্রুপ বা সতীর্থ-সহায়তা গ্রুপের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি হওয়া বা যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটা।
- দুর্যোগকালীন সময়ে সাংস্কৃতিক রীতিনীতি কিংবা নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায় চলাচলে সীমাবদ্ধতা তৈরি হওয়া।
- পর্যাপ্ত পুষ্টি, চিকিত্সা সেবা এবং আশ্রয়কেন্দ্র, নিরাপদ স্থান কিংবা আশ্রয় শিবিরে প্রবেশগম্যতার অভাব।
- আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা আশ্রয় শিবিরে/অপসারণ কেন্দ্রে নিরাপত্তার অভাবের কারণে যৌন শোষণ ও যৌন নির্যাতন।
- শিশু শ্রমিক হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে শিশু পাচার, বাল্য বিয়ে ও জোরপূর্বক বিয়ে, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাচার, অবৈধভাবে দত্তক গ্রহণ, যৌন কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এবং অন্যান্য ধরনের পাচার।
- প্রতিবন্ধিতার কারণে আত্মরক্ষার ক্ষমতা কম থাকা, যেমন দৌড়ানো, সাঁতার কাটা কিংবা উচুঁ কিছুতে উঠা।