কমিউনিটি ম্যাপিং প্রক্রিয়া
কমিউনিটি ম্যাপিং হলো কমিউনিটিতে কী আছে, কী নেই, কী দরকার, যা দরকার তা পাওয়ার উপায় ইত্যাদি তা জেনে একটি ম্যাপ বা মানচিত্রে দেখানো। আর এই কাজটি যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা হয় সেটাই হলো কমিউনিটি ম্যাপিং প্রসেস। তাহলে আমরা বলতে পারি কমিউনিটি ম্যাপিং প্রসেসের মাধ্যমে একটি কমিউনিটি বা এলাকায় বা পাড়ায় কী আছে, কী নেই, কী দরকার, এবং যা দরকার তা পাওয়ার উপায় ইত্যাদি সব কিছুর তালিকা একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তৈরি করা হয়। যখন একটি কমিউনিটির রিসোর্স বা সম্পদ, কার্যক্রম, চ্যালেঞ্জ ও জনমিতির ম্যাপিং করা হয় তখন সেই অনুশীলনে সকল ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে করে একটি কমিউনিটির মানুষ দুর্যোগকালে কী ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে তার একটি পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিত চিত্র পাওয়া সম্ভব হয়।
একটি কমিউনিটি ম্যাপিং প্রক্রিয়াকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য যা করতে হবে:
- একটি কমিউনিটিতে থাকা নারী, পুরুষ, মেয়ে ও ছেলে প্রতিবন্ধী ও অপ্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের কমিউনিটি ম্যাপিং প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা।
- বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সম-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য এই ধরনের অনুশীলন একটি প্রবেশগম্য স্থানে করতে হবে, একথা নিশ্চিত করতে হবে যে প্রক্রিয়াটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রবেশগম্য, বধির ব্যক্তিদের জন্য ইশারা ভাষায় দোভাষীর ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং মৃদু বা মাঝারি শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য পরিবারের সদস্যদের রাখা যেতে পারে এবং এই প্রক্রিয়াটি যেন শিখন প্রতিবন্ধীদের জন্য সহজেই বোধগম্য হয় তাও নিশ্চিত করতে হবে।
- এই প্রক্রিয়ার শুরু থেকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, প্রবীণ ব্যক্তি ও অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনগুলোকে প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে।
- সভা চলাকালে প্রবেশগম্য যোগাযোগ পদ্ধতি ব্যবহার করুন এবং প্রস্তুতি ও ফলো-আপ কার্যক্রমে কমিউনিটির সকল সদস্যদের সম্পৃক্ত করুন।
- কমিউনিটির সম্পদ ও অন্যান্য বিষয়ের উপর যে ম্যাপ বা মানচিত্র তৈরি করা হবে সেটা তৈরির শুরু থেকেই মনে রাখতে হবে ম্যাপটি যেন প্রবেশগম্য হয়। আর এ কারণে এটি যেন স্পর্শ দ্বারা বোঝা যায়, বৈসাদৃশ্য রং ব্যবহার করা, বড় আকারের অক্ষর ব্যবহার করা, চিহ্ন দ্বারা দেখানো এবং ম্যাপটি উপযুক্ত উচ্চতায় রাখা যাতে করে সকলের পক্ষে দেখা সহজ হয়।
- যদি ম্যাপ আকার জন্য নির্দিষ্ট কোন জায়গা না পাওয়া যায় তাহলে মাটিতে একটি টপোগ্রাফিকাল বা ভূচিত্র আঁকা যেতে পারে, কিংবা কোন একটি বোর্ডে বা বড় কাগজেও আঁকা যেতে পারে। তবে কমিউনিটির সকল সদস্যের কাছে ভৌত অবকাঠামোগুলোর বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করার দরকার রয়েছে, বিশেষ করে যাদের পক্ষে দেখা ও শোনা, ইত্যাদি কষ্টকর।
- যখন মানচিত্র বা ম্যাপে ভৌত কাঠামো দেখানো হবে তখন সেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, প্রবীণ ব্যক্তিদের প্রবেশগম্যতার বিষয়গুলো তুলে ধরুন।
- উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা যেমন নদীর পাড়, গভীর নলকূপ, খাড়া উচুঁ কিংবা নিচুঁ জমি এবং বিপজ্জনক স্থানসমূহ।
- ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর আগ্রহের জায়গাগুলো তুলে ধরুন যেমন প্রবেশগম্য রিসোর্স সেন্টার, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, দুর্যোগের সময় অপসারণ কেন্দ্র বা আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার প্রবেশগম্য পথ, প্রবেশগম্য পানি পাওয়ার স্থান, বিতরণ কেন্দ্র ইত্যাদি।
- ম্যাপিং প্রক্রিয়া নথিবদ্ধকরণ ও এর সমাপনীতে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর আগ্রহ ও উদ্বেগের বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে।