উদ্ধারকারী জলযান
নদী কিংবা অন্য কোন পানিপূর্ণ স্থান থেকে জরুরি পরিস্থিতিতে উদ্ধার কালে এমন ধরনের উদ্ধারকারী জলযান বা নৌকা বা জাহাজ পাঠাতে হবে যেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি (বিশেষ করে হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী) এবং অন্যান্য চলন প্রতিবন্ধী বা চলনের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে তাদের জন্য প্রবেশগম্য করতে হবে।
উদ্ধারকারী জলযানের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
- এই ধরনের জলযানের যাত্রীর অংশের মেঝে সমতল ও এমন বস্তু দিয়ে নির্মিত হতে হবে যা অ-পিচ্ছিল, এমনকি বৃষ্টির দিনেও। জলযানের প্রবেশমুখে উজ্জল রং দিয়ে চিহ্নিত হতে হবে।
- জলযানের উভয় পাশে নিরাপত্তার জন্য রেলিং থাকতে হবে এবং উঠা নামার জায়গা যথেষ্ট চওড়া এবং এমনভাবে নির্মিত হতে হবে যেন জলযান টার্মিনালের সাথে যতোদূরসম্ভব লেগে থাকে।
- উঠানামার প্যাসেজ যেন কমপক্ষে ৭৫০ মিমি হয়। এমন চওড়া জায়গা দিয়ে হুইলচেয়ার সুন্দরভাবে চলাচল করতে পারে।
- হ্যান্ডরেইল যথাযথ উচ্চতায় লাগাতে হবে যাতে করে সকলের জন্য ধরার সুবিধা হয়। সাধারণত দু'টি ভিন্ন উচ্চতায় হ্যান্ডরেইল লাগানো হলে সবার ধরতে সুবিধা হয়। সাধারণত ৭৫০ মিমি উচ্চতার হ্যান্ডরেইল হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীর জন্য যথার্থ এবং ১১০০ মিমি হ্যান্ডরেইল অন্য যাদের সাহায্য দরকার তাদের সকলের জন্য কার্যকর, যেমন: প্রবীণ ব্যক্তি।
- জলযানে একটি ১৫০০ মিমি ব্যাসের একটি জায়গা থাকতে হবে যেখানে একজন হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী তার হুইলচেয়ার সম্পূর্ণরূপে ঘুরাতে পারবেন। এই ধরনের জায়গা রাখার প্রয়োজন রয়েছে, বিশেষ করে যখন আবহাওয়া খারাপ হয়ে পড়ে এবং জলযান চালনার সাথে যাত্রীর স্থান পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এই ধরনের স্থান একাধিক থাকতে পারে কিন্তু জলযানের আকার আকৃতির বিবেচনায় এবং অন্যান্য যাত্রীদের বিবেচনায় ঠিক করতে হবে একটি জলযানে এমন কয়টি স্থান থাকবে।
- জলযানের সকল ধরনের ফার্নিচার এমন হওয়া দরকার যাতে কোন অংশ বের না হয়ে থাকে। হুইলচেয়ার ঘোরানোর সময় 'রাউন্ডিং' এবং 'আন্ডারকার্টিং' করা হলে সময় বাঁচে। আন্ডারকার্টিং হলো একটি পদ্ধতি, যে পদ্ধতিতে হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীর পা আটকানো রোধ করা সম্ভব হয়।
- হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী তার নিজের হুইলচেয়ারে বসে থাকবেন নাকি অন্যত্র স্থানান্তরিত হবেন সেই সিদ্ধান্ত তিনি নেবেন। তবে স্টোরেজ করার জায়গা সবসময় হাতের কাছেই থাকা উচিত্। হুইলচেয়ার রাখার জায়গা এমন হওয়া দরকার যাতে করে জলযানের বাকি যাত্রীদের চলাচলের কোন সমস্যা না হয়।
- জলযানের মেঝে ও নিরাপত্তার জন্য দেয়া রেলিং বিসদৃশ্য উজ্জল রংয়ের হলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য দেখা সহজ হয়। যেমন: রেলিং যদি উজ্জল হালকা রংয়ের হয় তাহলে মেঝে গাঢ় রংয়ের হতে পারে। সেক্ষেত্রে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা দুইয়ের মধ্যেকার পার্থক্য সহজেই বুঝতে পারেন। জলযানের চলার পথগুলোতে উজ্জল আলো থাকতে হবে। এছাড়াও জলযানের আসবাবপত্রের নিচের দিক থেকে আলো দেয়া হলে একদিকে যেমন দেখার প্রসারতা বাড়ে তেমনি নিরাপদে চলা যায়।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উদ্ধারকারী দল এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে সাহায্যকারী ব্যক্তি সকলকেই অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্ধার কৌশলের উপর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে। যদি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কাউকে ওই মুহুর্তে পাওয়া না যায় তাহলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কাছ থেকে জেনে নিতে হবে যে, কীভাবে তিনি জলযানে উঠতে চাচ্ছেন। তার মতামত নিয়ে তাকে জলযানে তুলতে হবে।