সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় কমিউনিটির পরিকল্পনার মধ্যে অবশ্যই সুনির্দিষ্ট চাহিদা ও অধিকারগুলোকে বিবেচনা করার পাশাপাশি বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সামর্থ্যকে বিবেচনা করা হয়। এই ধরনের পরিকল্পনা তৈরিকালে অন্যান্যদের সাথে এলাকার নারী, পুরুষ ও শিশু প্রতিবন্ধী এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিচয়ের মানুষদের এবং সকল বয়সী মানুষদের অর্থবহ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়।
এই ধরনের পরিকল্পনা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহায়তা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করার নতুন সুযোগ তৈরি করে যদি না তাদেরকে আগেই বিপদ ও ঝুঁকি মোকাবেলার করার সামর্থ্য নিরূপণ করার প্রক্রিয়া 'হ্যাজার্ড, ভালনারেবিলিটি ক্যাপাসিটি অ্যাসেসমেন্ট (এইচভিসিএ)' এর মাধ্যমে যাচাই করা না হয়। সবসময় মনে রাখতে হবে যে, অন্তর্ভুক্তিমূলক কাজ আগে শুরু করা হয় নাই, এখন আর করে কী হবে এমনটা না ভেবে সবসময় চেষ্টা করতে হবে শুরু করার প্রক্রিয়ার গোড়াতেই কিংবা যখনই অবস্থা তৈরি হবে দেরি না করে অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যক্রম করার মাধ্যমে প্রতিবন্ধীসহ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা ও প্রয়োজনীয় পরিবর্তনকে অভিযোজিত করা।
একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলা পরিকল্পনায় অবশ্যই সম্ভাব্য দুর্যোগ পরিস্থিতি কী হতে পারে এবং সেই পরিস্থিতি সামলানোর জন্য ন্যূনতম কী করতে হবে তা উচিত্ যেমন: প্রবেশগম্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা, অপসারণ এবং উদ্ধার ব্যবস্থা, আশ্রয় ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা, প্রাথমিক চিকিত্সা বা ফার্স্ট এইড ও মেডিকেল সহায়তা, স্বতন্ত্র ব্যক্তি ও খানা প্রস্তুত করার জন্য।
সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলা অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য যে প্রধান বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে:
- সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা নিশ্চিত করুন। যাদের বাদ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যেমন নারী ও মেয়ে শিশু প্রতিবন্ধী, বুদ্ধি কিংবা মনোসামাজিক প্রতিবন্ধী, বধির ব্যক্তি এবং সংখ্যালঘু ভাষাভাষি জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রয়োজনে বাড়তি প্রচেষ্টা নিন।
- ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সদস্যদের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস টাস্কফোর্স ও কমিটিতে কীভাবে অংশগ্রহণ করানো যায় এবং তাদেরকে কী ধরনের দায়িত্ব দেয়া যায় সেগুলো চিহ্নিত করা (তাদের অংশগ্রহণ ও দায়িত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে যা করা যেতে পারে তার মধ্যে যা থাকতে পারে যেমন দুর্যোগের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অন্তর্ভুক্তিমূলক থাকছে কিনা তা মনিটর করা, যোগাযোগে এবং আগাম সতর্কতা বার্তা দেয়া কিংবা প্রশিক্ষণে সহায়তা দেয়া এবং সচেতনতা বাড়ানো, কিন্তু একথাও মনে রাখতে হবে এর বাইরেও অন্যান্য কাজেও তাদেরকে যুক্ত করা যেতে পারে।
- প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিন যাতে করে তারা দুর্যোগকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও ত্রাণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হয়।
- একথা নিশ্চিত করুন যে সম্ভাব্য বিপদ মোকাবেলায় অন্তর্ভুক্তিমূলক সহায়তা দেয়ার প্রয়োজনীয় সম্পদগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। যেমন: এমন কোন পরিবার যদি থাকে যে পরিবারে চলাচলে সমস্যা আছে এমন ব্যক্তি আছে, তাহলে দুর্যোগের আগাম সতর্কতা হিসেবে বাসা থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে অপসারণকালে এই ব্যক্তির বাড়তি সহায়তা দরকার হবে। এই অবস্থায় অপসারণ পরিকল্পনা এমনভাবে করতে হবে যাতে করে সুনির্দিষ্টভাবে এই ব্যক্তির জন্য একটি অপসারণ পরিকল্পনা করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী সম্পদের সমাবেশ ঘটাতে হবে যাতে প্রয়োজনের সময়ে কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়।
- সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় কমিউনিটি পরিকল্পনার খসড়া স্থানীয় প্রতিনিধিত্বশীল সংস্থাগুলোর সাথে মিলিয়ে নিন যারা এই পরিকল্পনাকে কীভাবে আরো বেশি অন্তর্ভুক্তিমূলক করা যাবে সে ব্যাপারে মতামত ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে পারবে।
সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় পরিকল্পনার বিভিন্ন দিকগুলো সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক করার উপায়:
- পরিকল্পনা থেকে মূল বার্তাগুলো কী খুঁজে বের করুন এবং একাধিক যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তাকে সহায়তা করতে মূল বার্তাগুলোকে বিকল্প বিন্যাস বা বিকল্প ফরমেটে উপস্থাপন করুন।
- অপসারণ পথ বা আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথনির্দেশমূলক চিহ্ন কমিউনিটির বিভিন্ন স্থানে দিয়ে রাখুন যাতে করে যে কেউ সহজে পথ চিনে আশ্রয়কেন্দ্রে বা অপসারণ কেন্দ্রে যেতে পারে।
- গুরুত্বপূর্ণ বার্তাগুলো কমিউনিটির মানুষকে জানাতে লিফলেট, পোস্টার ও পথ নাটক ব্যবহার করুন এবং প্রাপ্ত সেবাগুলো সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলুন।
- দুর্যোগে সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব রয়েছে এমন ব্যক্তিদের ছবিসহ তালিকা প্রস্তুত করুন।